নিজেস্ব প্রতিবেদক
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সরকারি অর্থ বরাদ্দের অপব্যবহার থেকে শুরু করে শিক্ষা ভাতা আত্মসাৎ এবং নির্বাচনী দুর্নীতির মতো গুরুতর অভিযোগে স্থানীয় প্রশাসনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের ২৪ সালের ৪ মার্চ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস উন্নয়নের জন্য খাদ্য অধিদপ্তরের হিসাব ও অর্থ বিভাগ থেকে ১ লাখ ৪৩ হাজার ২ ‘হশো’ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। বরাদ্দের মধ্যে ইন্টারনেট খাতে ৭,২০০ টাকা, মুদ্রণ ও বাধাই বাবদ ৫,০০০ টাকা, স্ট্যাম্প ও সীল ব্যবস্থাপনা বাবদ ৪,০০০ টাকা, আসবাবপত্র মেরামত খাতে ৩৭,০০০ টাকা এবং আসবাবপত্র ক্রয়ের জন্য ৯০,০০০ টাকা বরাদ্দ ছিল।
তথ্যমতে, বরাদ্দের পুরো অর্থ উত্তোলন করা হলেও আসবাবপত্রের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। অফিস সূত্রে জানা যায়, বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ করে অফিসের কার্যক্রমে কোনো পরিবর্তন আনেননি তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, এক সরকারি কর্মকর্তার সন্তানদের জন্য বরাদ্দকৃত শিক্ষা ভাতার অর্থও আত্মসাৎ করেছেন তিনি।
শিবালয় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের স্প্রে ম্যান রুহুল আমিন (রানা) বলেন, বাজেট আসছে কিনা তাই জানিনা আমি। তাছাড়া কি কাজ উনি করেছেন না করেছেন এসম্বন্ধে কোন তথ্য জানা নাই আমার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই অফিসের সাবেক আরেক কর্মচারী বলেন, ফুড অফিসার সরকারি বরাদ্দের টাকা দিয়ে কোন কাজই করেননি। তাছাড়া অফিসে উনার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস নেই কারো। কথা বলতে গেলেই বদলিসহ নানাভাবে হয়রানি করার ভয় দেখান।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ওএমএস ডিলার নিয়োগের পূর্বে ফুড গ্রেইন লাইন্সের নামে মোটা অঙ্কের ঘুষ গ্রহণ করেছেন এই কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক (ওএমএস) ডিলারের জন্য এক আবেদনকারী বলেন, ফুড গ্রেইন লাইসেন্সের সরকারি ফ্রি ১১ শত ৫০ টাকা হলেও। ওই কর্মকর্তা তার লোকের মাধ্যমে আমার কাছ থেকে দুই ধাপে ৩৩ শত টাকা নিয়েছেন। কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারিনাই তাহলে আমার আবেদন বাতিল হয়ে যেতে পারে এই ভয়ে।
তবে এ বিষয়ে, মৌখিক কোন মন্তব্য বা ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি শিবালয় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো: মিজানুর রহমান।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন জানিয়েছেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের সহকারী উপ-পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, “বিষয়টি এইমাত্র জানলাম। উর্দ্ধতন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
অতিরিক্ত গুরুতর অভিযোগে উঠে এসেছে, সর্বশেষ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অর্থের বিনিময়ে নৌকা প্রতীকে ভোটবিহীন বিজয়ী করার চেষ্টার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন এই কর্মকর্তা।
Leave a Reply