স্টাফ রিপোর্টার, ৩০ সেপ্টেম্বর।
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ২৬নং মানিকনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. জাকারিয়া খানের বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় রোববার উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী দুই ছাত্রীর পরিবার। গত ২৪ সেপ্টেম্বর ওই যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটে। পরে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের জন্য বিদ্যালয়ে শালিস বসলেও এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়ে শালিস সম্পূর্ণ না করে অভিযুক্ত শিক্ষকে নিয়ে স্থান ত্যাগ করেন বিচারকেরা।
অভিযোগপত্রে জানা যায়,বিদ্যালয় ছুটির পর বাড়িতে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়াতেন হরিরামপুর উপজেলার ২৬নং মানিকনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. জাকারিয়া খান। প্রাইভেট পড়ার বিভিন্ন অযুহাতে ওই দুই ছাত্রীর শরীর ও স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করতেন। এবিষয়ে বেশ কয়েকবার শিক্ষক মো. জাকারিয়া খানকে নিষেধ করলেও তাতে কোন কাজ হয় নি। গত ২৪ সেপ্টেম্বর প্রাইভেট শেষে সবাইকে ছুটি দিলেও ওই দুই ছাত্রীকে আারো পড়ার কথা বলে শ্রেণী কক্ষে বসিয়ে রাখেন এবং ওই দুই ছাত্রীকে শ্লীলতাহানী করেন শিক্ষক মো. জাকারিয়া খান। এসব ঘটনা কাউকে না জানাতে ওই দুই ছাত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন শিক্ষক জাকারিয়া খান। পরে বাড়িতে এসে ওই দুই ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর বিষয়টি তাদের অভিভাবককে জানান।
ভুক্তভোগী এক ছাত্রীর মা জানান,শ্লীলতাহানীর ঘটনার পর বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে জানানো হয় এবং বিষয়টি মিমাংসার জন্য গত শুক্রবার বিদ্যালয়ে শালিসের ব্যবস্থা করা হয়। এলাকাবাসী ও উপস্থিত জনগণের তোপের মুখে শালিসের মিমাংসা না করেই বিচারকেরা চলে যান। পরে কোথাও সঠিক বিচার না পেয়ে রোববার প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
ভুক্তোভোগী আরেক ছাত্রীর বাবা জানান, বাড়িতে ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়ানোর সময় ছাত্রীর শরীর ও স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করতেন জাকারিয়া খান। এবিষয়ে তাকে বেশ কয়েকবার তাকে সতর্ক করাও হয়েছিল। তারপরও তিনি ছাত্রীদের সাথে এই ধরণের ঘটনা ঘটিয়েছেন।
এবিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মো. জাকারিয়া খান জানান, তাকে সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন করতে এধরনের মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। তার পর যেহেতু অভিযোগ উঠেছে তাই স্থানীয়ভাবে বসে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করা হচ্ছে।
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহরিয়ার রহমান জানান,ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীর অভিভাবকরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিনা আখতার জানান, শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিষয়টি তদন্ত করা হবে,তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply