স্টাফ রিপোর্টার, ০২ জুন।
বিষধর প্রাণঘাতক সাপ রাসেলস ভাইপারের আতঙ্কে দিন কাটছে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের চরাঞ্চলের কৃষক ও খামারীদের। বিষধর সাপের দংশন থেকে রক্ষা পেয়ে জমিতে কাজ করতে না পারছেন না খেটে খাওয়া চরাঞ্চলের মানুষ। এতে করে জমির ফসল ও গবাদি পশুর খাদ্য সংগ্রহের করতে না পেরে সমস্যায় কৃষক ও খামারীরা। তবে প্রশাসনের দাবি কৃষকদের সতর্কতার সাথে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
কৃষক ও খামারীরা জানান,হরিরামপুর উপজেলার কাঞ্চনপুর, লেছড়াগঞ্জ, সূতালড়ী, আজিমনগর ইউনিয়নের চরাঞ্চলে ভুট্টা,বাদাম,তিল,আমন ও আউশ ধানের আবাদ করেছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। এছাড়া কোরবানির জন প্রস্তুত করা পশুর জন্যচরাঞ্চলের আবাদি ও অনাবাদি জমি থেকে খাদ্য সংগ্রহ করছেন খামারী ও কৃষকরা। কিন্তু বিষধর পাস রাসেলস ভাইপারের আতঙ্কে অনেকে ফসলের মাঠে যেতে পারছেন না। পশুর খাদ্য সংগ্রহ করতে ব্যহত হওয়ায় দুশ্চিন্তায় খামারীরা।
চরাঞ্চলের কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, গত বৃহস্পতিবার কাঞ্চনপুর চরের তিল ক্ষেত থেকে কাটছিলে কেটে ঘরে তুলার কাজ করছিলেন কৃষক ও শ্রমিকেরা। এরপর দুপুরে তিল ঘরে তুলার জন্য ক্ষেতে গেলে বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপার দেখতে পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায় কৃষক ও শ্রমিকেরা। এরপর আর কোন কৃষক ওই ক্ষেতে যায় নি। অন্য কৃষকরাও ক্ষেতে যেতে ভয় পাচ্ছে।
শ্রমিক আকিবুল ইসলাম জানান,কিছুদিন আগে ধান কেটে ঘোড়ার গাড়ীতে উঠানোর সময় রাসেলস ভাইপার সাপ দেখতে পাই এবং ভয় পেয়ে চিৎকার দেই। পরে আশপাশের কৃষক ও শ্রমিকরা দৌড়িয়ে এসে সাপটিকে মেরে ফেলে।
কৃষক সাইদুল মোল্লা জানান,আমার জমিতেও একটি রাসেলস ভাইপার দেখতে পায় শ্রমিকেরা। পরে শ্রমিকেরা লাঠি দিয়ে পেটিয়ে সাপটিকে মেরে ফেলে। চরাঞ্চলের জমিতে সাপের উপদ্রবের কারনে কৃষক ও শ্রমিকরা কাজে যেতে ভয় পাচ্ছে। এভাবে চলছে থাকলে তো আমাদের ফসলের অনেক.ক্ষতি হবে। এখন তো শ্রমিকদের জোর করেও ক্ষেতে আনা যাচ্ছে না।
হরিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.তৌহিদুজ্জামান খান জানান,চরাঞ্চলে আবাদি ফসলের মধ্যে ভুট্টা ঘরে তুলেছেন কৃষকরা। এখন তিল ঘরে তুলতে চেষ্টা করছেন। কিন্তু রাসেলস ভাইপারের আতঙ্কে জমির ফসল ঘরে তুলতে কৃষকদের সমস্যা হচ্ছে। একারনে জমিতে কাজ করার সময় সতর্কতার সাথে কাজ করতে কৃষক ও শ্রমিকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো.শাহরিয়ার রহমান জানান,বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপারের বিষয়ে কৃষক ও জনপ্রতিনিধিদের সচেতন করা হচ্ছে এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃষক ও শ্রমিকদের জন্য বিশেষ ধরনের জুতার (গামবুট) ব্যবস্থা করা হবে। যাতে করে সাপের দংশন থেকে কৃষকরা রক্ষা পায়।
উল্লেখ্য,গত ৬ মার্চ বিকেলে হরিরামপুরের চরাঞ্চলে ভুট্টা ক্ষেতে কাজ করার সময় লাল মিয়া নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়।
Leave a Reply