1. ssexpressit@gmail.com : bdmessenger :
  2. azizulpress14@gmail.com : Azizul Hakim : Azizul Hakim
সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
প্রয়াত কৃষকদল নেতা আবু ইউসুফের কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত রোড ইনচার্জের অভিযোগে নীলাচল পরিবহনের ঘাট পরিচালকসহ গ্রেফতার ৩ পাটুরিয়া ঘাটে চাঁদাবাজির আধিপত্যে দ্বন্দ্ব চরমে, শঙ্কায় পরিবহন খাত   দিঘী ইউনিয়নে বাংলা নববর্ষ পালিত বিএনপি আয়োজিত কাবাডি খেলায় কালীগঙ্গা দল জয়ী শিবালয়ে বৈশাখী উৎসবে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মুখর জনপদ জাফরগঞ্জে যমুনার তীর থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন, এসিল্যান্ডের অভিযানে ট্রাক জব্দ ইউএনও জাকির হোসেনের যোগদানে বদলে যাচ্ছে শিবালয়ের চিত্র আ: জলিলকে নিয়ে প্রপাগান্ডা ছড়ানোর অভিযোগ — ‘মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত হবেন না’ গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে শিবালয়ে বিক্ষোভ

টাকায় মিলছে আয়েশী জীবন!খাবারে অনিয়ম

  • সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১৬১ বার পড়েছেন
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ২৭ জানুৃয়ারি।
মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারের অনিয়ম আর দুর্নীতি যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। টাকার বিনিময়ে কারাগারের ভিতরে বন্দিদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সবই মিলে কারাগারের ভিতরে। টাকা দিলে মিলে ভালো বিছানা আর টাকা না দিলে দুর্বিষহ জীবন-যাপন করতে হয় কয়েদিদের। অথচ টাকা দিলেই কারাগারের ভিতরে মিলে আয়েশী জীবন। এছাড়া কারাবন্দিদের চিকিৎসার জন্য নেই কোন চিকিৎসক ও নার্স। আর কারা কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে একটি সিন্ডিকেট কারাগারের ভিতরে বসেই এসব নিয়ন্ত্রণ করছে। এরফলে কারাগারের ভিতরের ক্যান্টিনে চলছে রমরমা ব্যবসা আর গড়ে ওঠেছে অনিয়ম ও দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য।
কারাগার সূত্রে জানা যায়,কারাবন্দিদের সকালের খাবারে সপ্তাহে চারদিন সবজি রুটি, দুইদিন খিচুরি ও একদিন হালুয়া রুটি দেওয়ার নিয়ম। এরমধ্যে হাজতিদের জন্য ৯০ গ্রাম ওজনের রুটি এবং কয়েদিদের ওজন ১২০ গ্রামের রুটি ও ১৫০ গ্রাম ওজনের সবজি। আর হাজতিদের খিচুরির চাউলের ৯০ গ্রাম আর কয়েদিদের ১২০ গ্রাম ওজনের চাউল। আর দুপুর ও রাতের খাবারে হাজতিদের জন্য ২৪৭.৮৬ গ্রাম চাউলের ওজনের ভাত ও কয়েদিদের জন্য ২৯১.৬০ গ্রাম চাউলের ওজনের ভাত এবং ১৪৫.৮০ গ্রাম ওজনের সবজি ও ৭২.৯০ গ্রাম ওজনের ডাল।
এছাড়া সপ্তাহে পাঁচদিন গরুর মাংস, চারদিন মুরগীর মাংস, একদিন ছাগল/খাসির মাংস এবং বাকি দিনগুলো বিভিন্ন জাতের মাছ। এরমধ্যে একজন কারাবন্দির জন্য গরুর মাংসের ওজন ৩৮.৭৮ গ্রাম, খাসির মাংস ৩৬.৪৫ গ্রাম, মুরগীর মাংস ৩৭.৯০৮ গ্রাম এবং মাছ ৩৬.৪৫ গ্রাম দেওয়ার নিয়ম থাকলেও এর উল্টো কথা বলছেন জামিনে আসা আসামীরা।
মানিকগঞ্জের সিংগাইরের গোলাইডাঙ্গার ইদ্রিস আলী জানান,একটি মামলায় তার ছোট ছেলে শিপলু ২ নম্বর আসামী। ওই মামলায় বৃহস্পতিবার (গত ১৬ জানুয়ারি) জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন আদালত। পরে রোববার (১৯ জানুয়ারি) কারাগারে ছেলে শিপলুর সাথে দেখা করি এবং ছেলে যেকোন মূল্যে জামিনে থেকে বের করতে বলে। কারণ খাবারের মান খুব খারাপ হওয়ায় কারাগারের খাবার খেয়ে যেকোন সময় তার মৃত্যু হতে পারে। পরে ক্যান্টিনে খওয়ার জন্য ৬শ টাকা দিয়ে এসেছি। যাতে ছেলেটা একটু খাইতে পারে। তারপর তো মঙ্গলবার ছেলেকে জামিনে বের করেছি। তবে বিন্দদের সাথে দেখা সাক্ষাত করতে কোন টাকা লাগেনা বলেও ইদ্রিস আলী জানান।
মানিকগঞ্জের শিবালয়ের হারেজ জানান,দেড়মাসের বেশি সময় কারাভোগের পর গত বছরের ১৮ডিসেম্বর জামিনে বের হয়েছি। খাবারে অনিয়ম দেখে জেল সুপার একদিন রান্নার লোকজনকে ডেকে আনেন এবং খাবার কম দেওয়ার বিষয়টি জানতে চায়। এরপর কয়েকদিন খাবারের পরিমাণ বেড়েছিল। তবে একজনকে কি পরিমাণ খাবার দেওয়া হয়,সেটা তো আমি জানিনা। কারাগারে থাকা অবস্থায় সপ্তাহে দুইবার একটু করে গরুর মাংস পাইছি। কিন্তু দেড়মাসে একবারও খাসির মাংস পাই নাই। যা দিছে তাই খাইছি। তবে আপনার কাছে এতো খাবারের কথা শুনলাম।
আরেক কারাভোগী আবু তালেব জানান, ৪৬ দিন কারাভোগের পর ১৮ ডিসেম্বর জামিনে বের হয়ে কারাগারের ভিতরের কথা তুলে ধরেন তিনি। আবু তালেব বলেন, কারাগারের প্রতিটি ওয়ার্ডে রাইটারসহ কয়েকজন ব্যক্তি দায়িত্বে থাকে। আর এসব ব্যক্তিরা বিছানার জন্য বন্দিদের কাছ ১৫শ টাকা দাবী করে। যার কাছে যেভাবে পারে,তারা টাকা আদায় করে। আর টাকা না দিলে টয়লেটে থাকতে বলে হুমকি দেয়। এর আগে জেল সুপার পরিদর্শনে আসলে আনোয়ার নামের এক বন্দি এসব কথা জেল সুপারকে জানায় এবং জেল সুপার চলে যাওয়ার পর ওয়ার্ডে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি আনোয়ারের সাথে বেপরোয়া আচারণ শুরু করে।
নজরুল বেপারী নামের আরেক কারাভোগী জানান, দেড়মাসের বেশি সময় কারাগারে ছিলাম। বিছানার চাদর তো দূরের কথা,টাকা ছাড়া কেছিুই দেয় নাই। টাকা না দিলে ছালা বিছিয়ে মেঝেতে ঘুমাতে হয়। ওরা টাকা ছাড়া কিছুই বোঝেনা। আর খাবারের মান ভালো না হওয়ায় কারাগারের ক্যান্টিন বেশ ভালো চলে। যাদের টাকা পয়সা আছে,তারা ক্যান্টিনের খাবার কিনে খায়। আর যাদের টাকা নাই,তারা ওই খাবার খায়।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি ইকবাল হোসেন কচি জানান, আগে বন্দিদের সাথে সাক্ষাত করতে গেলে টাকা লাগতো,এখন টাকা লাগেনা। এমন দৃশ্য দেখিয়ে সবার চোঁখে ধূলো দিয়ে ভিতরে দুর্নীতির আখড়া বানিয়ে রেখেছে। জেলা কারাগার এখন বাইরে ফিটফাট ভিতরে সদরঘাট। এসব বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে,জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির খান জানান,কারাবন্দিদের খাবারের মান নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এবং বর্তমানে খাবারের মান ভালো। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বন্দিরা বিছানা পাবে এবং টাকার বিনিময়ে কারা হাসপাতালে থাকার কোন সুযোগ নেই। তারপরও যদি কারো বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং বন্দিদের সেবা নিশ্চিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
এবিষয়ে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ডক্টর মানোয়ার হোসেন মোল্লা জানান, কারাগার পরিদর্শন করে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং যদি কোথাও কোন অনিয়ম, ঘাটতি থাকলে সাথে সাথে তা ঠিক করা হচ্ছে। তারপরও কোন অসাধু কর্মকর্তা অনিয়মের সাথে জড়িত কি-না তা খতিয়ে দেখা হবে। কোন অনিয়ম পাওয়া গেলে,তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন :