জেলা আঃলীগ নেতা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের শাস্তির দাবি

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ২৮ জুলাই।

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক দেওয়ান সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে হয়রানি-মারধর ও মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর অভিডেযাগ এনে মানববন্ধন পালিত হয়েছে।

রোববার দুপুরে হয়ানির ও মারধরের শিকার এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন করেন।

মানববন্ধনে আয়েশা আক্তার, নুরুন্নাহার বেগম, মীর মালেক ও আজিজুল বেপারীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ভুক্তভোগী আয়েশা আক্তার বলেন,আমার ছেলে আশরাফুল ইসলাম বিশ্বাস গত মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল যোগে হরিরামপুরের লেছড়াগঞ্জ বাজারে যাচ্ছিল। কিন্তু পথিমধ্যে লাউতা মোড়ে আমার ছেলের মোটারসাইকেলের সাথে বিপরিত দিক থেকে আসা আরেকটি মোটরসেইকেলের মুখোমুখি সংর্ঘষ হয় এবং ঘটনাস্থলেই আামর ছেলে আশরাফুল মারা যায়।পরে এঘটনায় অপর মোটরসাইকেল চালক শ্রীদাস রাজবংশীকে আসামী করে হরিরামপুর থানায় আমার ভাই আজিজুল বেপারী মামলা করে।

তিনি আরও বলেন, মামলার করার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা দেওয়ান সাইদুর রহমান আমার ভাইকে তার অফিসে (উপজেলা পরিষদ কার্যালয়) ডেকে নিয়ে যায়। এরপর মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি দেখায় তাকে। এছাড়া মামলা তুলে না নিলে চুরির মামলা দিয়ে আমার ভাইকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। ওই হুমকির পর থেকে আমরা বাড়ি-ঘর ছাড়া হয়ে আছি।

আরেক ভুক্তভোগী মীর মালেক বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় তার (দেওয়ান সাইদুর রহমান)পক্ষে কাজ না করায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সময় আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করতেন দেওয়ান সাইদুর রহমান। ওই ঘটনার জেরে গত মঙ্গলবার সন্ধা সাড়ে ৭টার দিকে আমার মুদি দোকান থেকে তার ৮/১০জন লোকজন আমাকে জোর করে উপজেলায় ধরে নিয়ে যায়। এরপর উপজেলা জেলা পরিষদের ভিতরে তার অফিসে বসিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন।গালাগালের প্রতিবাদ করলে সাইদুর রহমান ও তার লোকজন অফিসের ভিতরে আমাকে মারধর করেন এবং হত্যা হুমকি দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেয় আমাকে। পরে এঘটনায় হরিরামপুর থানায় একটি মামলা করি। মামলার পরও আমাকে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও তার লোকজন।

মামলার বাদি আজিজুল বেপারী বলেন, আমার ভগ্নিপতি আমার বোনকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর মানুষের বাসায় কাজ করে ভাগ্নেকে(আশরাফুল ইসলাম)পড়লেখা করাইতেছিল।কিন্তু মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ভাগ্নে মারা যাওয়া। আমার বোনে শেষ সম্বল ছিল ভাগ্নে কিন্তু সেটাও চলে গেলো। এখন তো ভাগ্নে হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে উল্টো আমাকে হুমকি-ধামকি আর মামলার ভয় দেখাচ্ছেন দেওয়ান সাইদুর রহমান। বিচার চাইতে গিয়ে এখন আমাদের পলায়ে থাকতে হচ্ছে। আমরা সঠিক বিচারের জন্য মানববন্ধন করছি। যাতে প্রশাসন ও সরকার আমাদের সাহায্য করে।

তবে হরিরামপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক দেওয়ান সাইদুর রহমানের দাবি, মামলা হওয়ার থানার ওসির বিষয়টি মিমাংসা করতে বলেছিলেন। সেজন্য আমি তাদেরকে ডেকে বিষয়টি মিমাংসার জন্য ডেকেছিলাম।আসলে আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে,সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে আমার সাথে শত্রুতা করা হচ্ছে। কারন তারা তো আমার প্রতিপক্ষ্য বা সমকক্ষ না। তাদের সাথে আমার কিসের শত্রুতা থাকবে।

এবিষয়ে হরিরামপুর থানার ওসির শাহ নুর-এ আলম জানান,মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার বিষয়ে উভয়পক্ষ মামলা থানায় করেছেন। এছাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষী হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।