মানিকগঞ্জের শিবালয়ে অবস্থিত চায়না মালিকানাধীন হার্ডওয়্যার ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশ লিমিটেড -এ শ্রমিক নির্যাতন, নামাজে বাধা, নারী শ্রমিকদের শৌচাগারে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনার প্রতিবাদে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামলে মালিক পক্ষের লোকজন তাদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এক বছর না পেরোতেই এই কারখানায় শ্রমিকদের সঙ্গে অমানবিক আচরণের একাধিক অভিযোগ উঠেছে। শ্রমিকদের দাবি, কারখানার ব্যবস্থাপক ওবায়দুর রহমান, পরিদর্শক আল-মামুন গাজী এবং চীনা প্রকৌশলী চিন কিজিন, শ্রমিকদের নিয়মিত শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন।
এক শ্রমিক জানান, “আমাদের বিনা কারণে মারধর করা হয়, ঠিকমতো বেতন দেওয়া হয় না। এমনকি নামাজ পড়তেও বাধা দেওয়া হয়।”
আরেকজন নারী শ্রমিক বলেন, “আমাদের শৌচাগারে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। এতে আমরা আতঙ্কে থাকি।”
এই নির্যাতনের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করলে মালিক পক্ষের লোকজন তাদের ওপর হামলা চালায়। অভিযোগ উঠেছে, শ্রমিকদের আটকে রেখে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করা হয় এবং চীনা অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয়। এতে চার শ্রমিক গুরুতর আহত হন।
ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত কারখানায় উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে মালিক পক্ষ, শ্রমিক নেতারা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে কারখানার ব্যবস্থাপক ওবায়দুর রহমান নিজেদের ভুল স্বীকার করেন এবং আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত অনিয়ম শুধরে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
শ্রমিকরা বলছেন, তারা প্রশাসনের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেছেন, তবে দাবি পূরণ না হলে আরও বড় আন্দোলন হবে।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন শ্রমিক নেতারা। অন্যথায়, এই ধরনের নির্যাতন ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আরও বড় আন্দোলনের ডাক দেওয়া হতে পারে।
Leave a Reply